খোশখবর ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী দিনে ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়তে চলেছে আমাদের সাধের, বড় আদরের পৃথিবী। আর বিশ্বজুড়ে হিমবাহ বা গ্লেসিয়ারের গলে যাওয়াটাকে তার সূচনা হিসেবেই দেখছেন বিজ্ঞানীরা। হিমবাহ যে গুরুতর হুমকির মুখে পড়েছে, তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ ২০২৫ সালকে ‘আন্তর্জাতিক হিমবাহ সংরক্ষণ বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। আর ইউনেস্কো (UNESCO) ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO)র এমন উদ্যোগের বছরেই হিমবাহ–শূন্য হয়ে গেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা।
তবে শুধু ভেনেজুয়েলার কথা বললে বিপদের কিছুই বলা হয় না। অনলাইন স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন তাদের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে ‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ জার্নালে প্রকাশিত তথ্য তুলে ধরে জানিয়েছে এই শতাব্দীর শেষে পৃথিবীর প্রায় ৯০ শতাংশ হিমবাহ হারিয়ে যাবে। সেই পরিস্থিতিতে বছরে সর্বোচ্চ ৪,০০০টি হিমবাহ বিলুপ্ত হতে পারে।
গুগলে আরও ' খোশখবর'
প্রশ্ন উঠতে পারে হিমবাহ আসলে কী? হিমবাহ হল বরফ, তুষার ও পাথরের বিশাল স্তূপ, যা স্থলভাগে তৈরি হয়ে নিজের ওজন ও মাধ্যাকর্ষণের টানে ধীরে ঢাল বেয়ে নেমে আসে। গত কয়েক দশকে হিমবাহ দ্রুত গলে যাওয়ার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের জলের উচ্চতা বেড়ে চলেছে।এর ফলে নিশ্চিত ডুবে যাওয়ার পথে পৃথিবীর বিখ্যাত বিভিন্ন শহর।
বিপদটা আসলে কোথায়? ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৫৬.৭° ফারেনহাইট। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য হল বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় ৩.৬° ফারেনহাইটের নিচে রাখা এবং কোনোভাবেই ২.৭° ফারেনহাইট অতিক্রম না করা। বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখা।
আল্পস পর্বতমালায় বর্তমানে প্রায় ৩,০০০টি হিমবাহ আছে। কিন্তু সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিস্থিতিতেও ২১০০ সালে টিকে থাকবে মাত্র ৪৩০টি; আর তাপমাত্রার সর্বোচ্চ বৃদ্ধিতে তা নেমে আসবে প্রায় ২০টিতে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের ক্ষোভ সাধারণ মানুষ থেকে রাষ্ট্রনেতা কেউই পাত্তা দিচ্ছেন না পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে। অথচ তাপমাত্রা বৃদ্ধির ২.৭° ফারেনহাইট হলেই ২০৪১ নাগাদ বছরে প্রায় ২,০০০টি হিমবাহ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি ৭.২° ফারেনহাইট হলে ২০৫৫ নাগাদ বছরে প্রায় ৪,০০০টি হিমবাহ হারাবে পৃথিবী। ২১০০ সালে টিকে থাকবে মাত্র ১৮,০০০টি হিমবাহ। অর্থাৎ ডুবেই যাবে পৃথিবীর অনেক ভূখণ্ড ও শহর। অর্থাৎ এখনই না ভাবলে শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর।
পিন্টারেস্টে ‘খোশখবরের’ আশ্চর্য দুনিয়া।ক্লিক করুন এই লিঙ্কে
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]

0 মন্তব্যসমূহ