একনজরে

10/recent/ticker-posts

Spending time mobile-laptop মোবাইল-ল্যাপটপে বেশি সময় কাটাচ্ছেন? – জেনে নিন পাঁচটি সাবধানবাণী


সত্যি বলতে কি আমার আপনার জীবনটাই এখন গ্যাজেট নির্ভর

খোশখবর ডেস্কঃ এখন আমাদের অনেকেরই জীবন গ্যাজেট নির্ভর। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই বদলে গেছে আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাস। আগের মত সবকিছুতেই লাইনে দাঁড়ানোর দিন আর নেই। অফিসের কাজ হোক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাটিং – সবই এখন চলছে হাতে কলাপাতার মতো বড় মোবাইল নিয়ে বা কোলের উপর ল্যাপটপ ফেলে। কোথাও বেড়াতে যাওয়ার টিকিট কাটবেন বা ইলেক্ট্রিকের বিল পেমেন্ট করবেন – সবই এখন ঘটে চলে আপনার আঙুলের ছোঁয়ায় বা মাউসের ছোটাছুটিতে। আপনার সন্তান যখন বিগ স্ক্রিনের টিভিতে কার্টুন বা ক্রিকেটে মশগুল তখন আপনি ট্যাবলেটে দিব্যি জেনে নিচ্ছেন মুচমুচে ফিশ পকোড়া বানানোর উপায়টা কী ? আপনাকে তথ্য দিতে, আনন্দ দিতে, অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করাতে হাজির হাজার রকমের অ্যাপস।

আরও পড়ুনঃ সাইক্লিং করলে অনেক লাভ,শরীরের পাশাপাশি পরিবেশেরও

তবে শুধু বড়রা কেন? আজকের দিনে শিশুদের হাতেও তো পৌঁছে যাচ্ছে মোবাইল-ট্যাবলেট। তারা নিজেরাই রঙিন ভিডিও দেখে বা গেম খেলে বাবা-মাকে বিরক্ত না করে কাটিয়ে দিচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়। কিন্তু আপনি কি জানেন এর বিপদ কতটা? গ্যাজেটের স্ক্রিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানোয় কী কী সমস্যা হতে পারে আপনার ও আপনার পরিবারের সদস্যদের? এই বিষয়ে কাজ করা বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক মহল কমপক্ষে পাঁচটি ক্ষেত্রে শুনিয়েছেন বিশেষ সাবধানবাণী।




ডিজিটাল স্ক্রিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানোর বিপদ

দিনের অনেকটা সময় ডিজিটাল স্ক্রিন নির্ভর হয়ে কাটালে চোখ সহ নানারকম শারীরিক সমস্যা তৈরি হতে পারে এমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। হতে পারে মানসিক সমস্যাও। আগে থেকে সতর্ক না হলে তা পৌঁছে যেতে পারে পারিবারিক জটিলতাতেও।



১। স্ক্রিনের রেডিয়েশন থেকে সমস্যা – দেওয়াল জোড়া বড় টিভি, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট থেকে স্মার্টফোন – মোহময়ী ডিজিটাল স্ক্রিনের অমোঘ আকর্ষণ এড়াতে পারেন না অনেকেই। বেশিক্ষণ এই স্ক্রিনের উজ্জ্বল আলো যেমন চোখের ক্ষতি করে তেমন এর থেকে আসা রেডিয়েশন থেকে হতে পারে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ। দীর্ঘসময় মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে সময় কাটানোর বদলে সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করুন। কমিয়ে রাখুন স্ক্রিনের উজ্জ্বল আলো আর প্রয়োজনটুকু বুঝে সারা দিনে ডিজিটাল স্ক্রিনের ব্যবহার নামিয়ে আনুন এক থেকে দু ঘণ্টায়।

২। স্ট্রেস জনিত সমস্যা – অনেকেই অফিস থেকে ফিরে বা কাজের মধ্যেই ডুবে পড়েন সোশ্যাল মিডিয়ায় বা ইন্টারনেটে। ভাবেন এতে শরীর ও মন তাজা হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে ব্যাপারটি ঠিক এর উল্টো। বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষা বলছে অতিরিক্ত ইলেক্ট্রনিক্স গ্যজেটের ব্যবহার স্ট্রেস বা অবসাদ আরো বাড়িয়ে দেয়। আর শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাবে ঘুমের সমস্যার পাশাপাশি তৈরি হয় তাদের ব্যবহার জনিত জটিলতাও।


৩। ঘুম জনিত সমস্যা – হাতে একটা স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট থাকলে দুনিয়াটাই যেন অন্যরকম। বিশেষ করে টিনএজ প্রজন্ম। সে পাচ্ছে ডিজিটাল জগৎ। ভার্চুয়াল ভালবাসা আর মায়াবী বন্ধুত্ব। এই দুনিয়ার নেশায় ঘুম আসে না গভীর রাতেও। চিকিৎসকদের মতে একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। আর এখানেই তৈরি হয় সমস্যা। মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমোনোর অভ্যাস তৈরি হওয়া এই সব মানুষগুলোর শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। ওবেসিটি থেকে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনসন থেকে হার্টের রোগে জর্জরিত হয় শরীর।

আরও পড়ুনঃবিষন্ন হবেন না,মন ভাল রাখতে মানুন এই কটা নিয়ম

৪। সম্পর্ক জনিত সমস্যা – শুনতে অবাক লাগলেও আজকের এই ডিজিটাল দুনিয়ার স্মার্টফোন প্রজন্মের কাছে যেন ভালবাসার বন্ধনের কোনো দাম নেই। সংসারে প্রত্যেকেই যে যার নিজের দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত। অফিসের কাজ বা চ্যাটিং সরিয়ে রেখে স্বামী-স্ত্রী বা পরিবারের অন্যজনেরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে সময় পায় না বা চায় না। আর এখানেই সংসারের ভাঙনের সর্বনাশ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই সময় থাকতে এখনই সচেতন হোন আপনি। স্মার্ট ফোন সরিয়ে রেখে ফিরিয়ে আনুন ভালবাসার বন্ধন।


৫। শারীরিক সমস্যা – ডিজিটাল দুনিয়ার স্মার্ট বন্দোবস্ত আপনাকে ঘড়কুনো করে দিয়েছে। আপনার খেলা দেখা, সিনেমা দেখা, এমনকি বাজার করা বা ইলেকট্রিক বিল মেটানোর কাজটাও হয়ে যাচ্ছে স্মার্ট ফোনে বা ল্যাপটপে। সারাদিন বসে থাকার এই জীবন আপনার মেদ বাড়িয়ে দিচ্ছে, তৈরি করছে স্পন্ডেলাইসিস সহ নানা জটিল সমস্যা।

ফলে এখনই সাবধান হোন। ডিজিটাল যুগের সঙ্গে পা মিলিয়ে আপনাকেও চলতে হবে, আপনাকেও কাজের জায়গায় ও সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে স্মার্ট ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করতে হবে। তবে মনে রাখবেন তা যেন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে। প্রয়োজনটুকু ছাড়া সরিয়ে রাখুন গ্যাজেটটিকে। সময় দিন আপনার পরিবারকে। তৈরি হোক সুখী গৃহকোণ।


[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]

[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।] 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ