শসা হল একটি সতেজ, পুষ্টিকর এবং অবিশ্বাস্যভাবে বহু উপকারী একটি ফল
খোশখবর ডেস্কঃ প্রয়োজনীয় ফল হিসেবে হোক বা রূপচর্চা – শসার উপকারের যেন শেষ নেই। শসা খাওয়া রক্তে শর্করা কমাতে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। শসা এমন একটা পুষ্টিকর ফল যাতে জলের পরিমাণ থাকে প্রচুর।অনেকে শসাকে সবজি হিসেবে ভাবলেও আসলে তা একটি ফল। সর্বাধিক উপকার পেতে শসার খোসাও খেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
কী কী আছে শসায়?
শসা এমন একটি ফল যার ভেতর প্রচুর পরিমাণ জল (৯৬%) আছে। শসায় ক্যালোরি কম কিন্তু প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। একটা ৩০০ গ্রামের খোসা ছাড়ানো কাঁচা শসাতে ৪৫ ক্যালোরি শক্তি মেলে। এছাড়াও মেলে কার্বোহাইড্রেট ১১ গ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, ফাইবার ২ গ্রাম।পাশাপাশি মেলে ভিটামিন সি,ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম,পটাসিয়াম,ম্যাঙ্গানিজ।
শসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
গবেষণায় দেখা গেছে শসাতে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ট্যানিন সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেল জমা হতে বাধা দেয়। ফলে আমাদের শরীর দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। কারণ ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেল জমা হওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরণের দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা তৈরি হয়। শসা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ বাইরে বের করে দেয়।
শসায় থাকে প্রচুর জল
আমাদের শরীরের সুষ্ঠু কাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।শসায় রয়েছে প্রায় ৯৬% জল। তাই পর্যাপ্ত শসা খেলে হাইড্রেশন বাড়ে এবং আপনার শরীরে প্রতিদিনের তরলের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে তৈরি হওয়া পাথরও গলে যেতে পারে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে শসা
পেট ভরে শসা খেলেও শরীরে ক্যালোরি যুক্ত হয় অনেক কম। কারণ শসায় ক্যালোরির পরিমাণ কম। হিসেব বলছে ৩০০ গ্রাম শসায় ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ৪৫। ফলে শসা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে।স্যান্ডউইচ এবং সাইড ডিশগুলিতে স্যালাড হিসেবে শসার ব্যবহার আপনার শরীরে এনে দেবে সতেজ ভাব। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে তা হজমে সাহায্য করে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘদিনের কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর হয়।
সৌন্দর্যচর্চার সঙ্গী শসা
শসায় প্রচুর জল ও কম ক্যালরি থাকায় যাঁরা দেহের ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য শসা আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করে।অনেকে শসা গোল করে কেটে চোখের পাতায় লাগান অথবা বেঁটে মুখে বা শরীরের নানা অংশে লাগান।এতে শরীরে জমে থাকা ময়লা পরিস্কার হয়ে যায়। শসার মধ্যে থাকা খনিজ সিলিকা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ত্বকের ও হজমের যত্নে শসা
শসায় থাকা প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সিলিকন ত্বকের যত্নে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে তা হজমে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর হয়। নিয়মিত শসার ব্যবহার চোখের জ্যোতি বাড়ানোর পাশাপাশি ছানি পড়া ঠেকাতেও কাজ করে।
শর্করা কমাতে, কোষ্ঠকাঠিন্যে শসা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে শসা রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিসের কিছু জটিলতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। এই ফল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া শসায় রয়েছে ফাইবার যা মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডিহাইড্রেশন কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য বড় সমস্যার কারণ। শসাতে প্রচুর পরিমাণে জল থাকে এবং হাইড্রেশন বাড়ায় - যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে পারে।তাছাড়া শসায় রয়েছে ফাইবার, যা মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ব্যথা মাথাধরা থেকেও মুক্তি
প্রচুর পরিমাণে সিলিকা থাকায় শাসার রসের সঙ্গে গাজরের রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নেমে আসে। ফলে গাঁটে গাঁটে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগার থাকে।রাতের খাবারে স্যালাড হিসেবে শসা খেলে ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর তাজা ভাব থাকে।
শসা হল একটি সতেজ, পুষ্টিকর এবং অবিশ্বাস্যভাবে বহু উপকারী একটি ফল। ফলে আপনার খাদ্য তালিকায় শসা রাখুন সবসময়। কম ক্যালোরি পাশাপাশি এতে রয়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ। সেইসঙ্গে রয়েছে প্রচুর জলের যোগান। সরাসরি কাঁচা অবস্থায় তো বটেই স্যালাডের মাধ্যমে এবং আচার করেও খাওয়া যেতে পারে শসা।
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ