৬৮ বছর আগে শেষবার পৃথিবীর কাছাকাছি এসেছিল ওলবার্স ধূমকেতু।এর পুরো নাম ১৩পি/ওলবার্স কমেট। জার্মান জ্যোতিবিজ্ঞানী হাইনারিশ ওলবার্স প্রথম এই ধূমকেতুকে চিহ্নিত করায় তাঁর নামেই ডাকা হয় এটিকে। ১৮১৫ সালে জার্মান গণিতবিদ কার্ল গাউস এই ধূমকেতুর গতিপথ নির্ণয় করেন।
রাতের আকাশে ধূমকেতু ওলবার্সকে দেখতে গেলে আপনাকে দূরবীনে চোখ রাখতে হবে।গত ৩০ জুন এটি ছিল সূর্যের সবচেয়ে কাছে।আর ২০ জুলাই এটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে থাকবে।এটি উর্সা মেজর থেকে উত্তর-পশ্চিম আকাশে লিও মাইনরের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
কিছুদিন আগেই গত এপ্রিল মাসে আমাদের পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে ঘুরে গেছে মাউন্ট এভারেস্টের চেয়েও বড় ১২পি/পন্স-ব্রুকস। যাকে বলা হয় ডেভিল কমেট’ বা ‘শিংওয়ালা ধূমকেতু’। ডেভিল ধূমকেতুও প্রতি ৭১.২ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। যদিও দীর্ঘ বছর পর পর পৃথিবীর কাছাকাছি আসা ধূমকেতুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হ্যালিস কমেট। এ ধরনের ধূমকেতুকে বলা হয় ‘পিরিয়ডিক কমেট’।
হ্যালির ধূমকেতু ৭৪ থেকে ৭৬ বছরের মধ্যে একবার পৃথিবীর কাছাকাছি আসে।১৯৮৬ সালে শেষবার এসেছিল হ্যালিস কমেট,ফের তার আসার সম্ভাবনা ২০৬১ সালে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এত দীর্ঘ সময় পর পর আসা ধূমকেতুগুলোকে মানুষ তার জীবদ্দশায় একবারই দেখতে পায়।সেজন্যই ৬৮ বছর পর আসা ওলবার্সকে ঘিরে এত কৌতূহল বিজ্ঞানী মহলে।
নাসা ও জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির তথ্য অনুযায়ী ওলবার্স ধূমকেতু ২০ জুলাই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি ১৭৬ মিলিয়ন মাইল বা ২৮৩.৫ মিলিয়ন কিমি দূর দিয়ে অতিক্রম করবে। সেই দূরত্বে থেকেই আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল অবস্থানে থাকবে সে। ঘণ্টায় ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮৬৭ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে এই ধূমকেতু।
জ্যোতিবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন সন্ধ্যের পর উত্তর-পশ্চিম আকাশে সপ্তর্ষিমণ্ডল এবং লিও মাইনর বা উপর দিকের সিংহ রাশির মাঝামাঝি জায়গায় এই ধূমকেতুর দেখা মিলবে।তবে খালি চোখে নয়, একে দেখতে লাগবে একটা ভাল বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপ।অথচ ১৮১৫ সালের ৬ মার্চ যখন প্রথম এই ধূমকেতুর খোঁজ মেলে, তখন খালি চোখেই একে দেখা গিয়েছিল।হিসেব অনুযায়ী এই জুলাইয়ের পর ২০৯৪ সালের মার্চে ওলবার্স ফের পৃথিবীর কাছে আসবে।
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ