একনজরে

10/recent/ticker-posts

কিভাবে এল ঐতিহাসিক ‘মে দিবস’?


খোশখবর ডেস্কঃ মে দিবসকে ‘শ্রমিক দিবস’ হিসেবে মানে গোটা পৃথিবী। এই দিনটি চিহ্নিত শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের, আন্দোলনের দিন হিসেবে। আজও যে কর্মক্ষেত্রে ৮ ঘন্টা কাজের হিসেব রাখা হয় তার মূলে রয়েছে এই মে দিবস। মে দিবসের ইতিহাস জানতে গেলে আমাদের ফিরে যেতে হবে প্রায় ১৩৪ বছর আগে। ১৮৮৬ সালের ১ মে আমেরিকার শিকাগোর রাস্তায় সংঘটিত ঘটনা ও পরবর্তী ঘটনাবলি থেকেই এই দিবসের উৎপত্তি। উনবিংশ শতকের শেষদিকে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করা শ্রমজীবী মানুষেরা প্রাণের দায়ে ক্রমশ এক হচ্ছিলেন। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১লা মে শ্রমিকেরা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে মহামিছিল ও ধর্মঘট সংগঠিত করেছিলেন শিকাগো শহরের হে মার্কেট স্কোয়ারে।দাবি ছিল, শ্রমিকদের আট ঘণ্টা কাজ, আট ঘণ্টা বিশ্রাম ও বাকি আট ঘণ্টা খেলাধুলোর সুযোগ করে দেওয়া।যদিও শ্রমিকদের এই আন্দোলন ভালভাবে নেয়নি কারখানার মালিকেরা।বর্বর পন্থায় সে ধর্মঘট দমন করা হয়।

৩ মে শ্রমিকদের সমাবেশে পুলিশের গুলিবর্ষণে ৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারায়। শ্রমিকরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করলে কারখানার মালিকরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। তাতে ৪ জন শ্রমিকের প্রাণ যায়। পরের বছর ধর্মঘট সংঘটিত করার অপরাধে অগাস্ট স্পাইস নামে এক শ্রমিক নেতার ফাঁসি হয়। হে মার্কেটের শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। এই আন্দোলন,এই রক্তক্ষয়ই নিয়ে আসে মে দিবসের অধিকার। ১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১লা মে কে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই থেকেই প্রায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ‘মে দিবস’কে শ্রমদিবস হিসেবে পালনের সূত্রপাত। ভারতবর্ষে চেন্নাই শহরের মেরিনা বিচে ১৯২৩ সালে প্রথম ‘মে দিবস’ পালিত হয়। তবে শ্রমিকদের আত্মত্যাগ,কষ্ট,শ্রম,আন্দোলন এই সবকে বড় করে দেখাতেই পরবর্তীকালে মে দিবসের সঙ্গে ‘মহান’ শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়। আর এর পেছনে শ্রমিক আন্দোলনের একটা বড় ইতিহাস থাকায় এর সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক’ শব্দটিও বসানো হয়।