একনজরে

10/recent/ticker-posts

Colour-Coded Cities In India ভারতের নানা রঙের শহর, জানুন কোন শহরের কী নাম?


খোশখবর ডেস্কঃ ভারত এমন এক দেশ যার অসংখ্য ভাষা, রঙ, সংস্কৃতির সঙ্গে গ্রাম ও শহরগুলোরও আছে নিজস্ব পরিচয়।সব মিলিয়ে ভারতের প্রতিটি অলিতে গলিতে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য আর ইতিহাসের গল্প।ভারত মানেই বৈচিত্র, নানা রঙে ভরপুর এক দেশ। দেশের অনেক মনোমুগ্ধকর শহরকেও তাদের নিজস্ব রঙের নামে চেনা হয়।যেমন জয়পুরকে বলা হয় গোলাপি শহর, রূপালি শহর বলা হয় কটককে, নীল শহর বলা হয় যোধপুরকে।কেন ভারতের একেকটি শহরের একেক রকম নাম? চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক ভারতের বিভিন্ন শহরের রঙিন হওয়ার গল্প।

১. গোলাপি শহর – জয়পুর (রাজস্থান)

ভারতের বিভিন্ন রঙিন শহরের গল্পে প্রথমেই এসে যেতে পারে রাজস্থানের জয়পুরের কথা।আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন, জয়পুরকে বলা হয় ‘গোলাপি শহর’।ঐতিহাসিক এই প্রাচীরঘেরা শহরের প্রায় সব দেয়ালেই রয়েছে গোলাপি আভা। শহরটি ১৮৭৬ সালে প্রিন্স অ্যালবার্টকে স্বাগত জানানোর জন্য ধূসর টেরাকোটাকে গোলাপি রঙে রাঙানো হয়েছিল।সেই থেকেই এটি পেয়েছে গোলাপি শহরের নাম।

২. নীল শহর – যোধপুর (রাজস্থান)

জয়পুরকে গোলাপি শহর বলে ডাকা হলেও যোধপুরকে বলা হয় নীল শহর, কারণ এখানে ঘরবাড়িগুলি নীল রঙে রাঙানো যেন ছবির মত।একে বলা হয় ব্লু সিটি অফ ইন্ডিয়া।আপনি যদি উঁচু থেকে দেখেন এই শহরকে তাহলে দেখবেন পুরো শহরটার ছাদগুলো নীল রংয়ের।বলা হয়, ব্রাহ্মণরা নিজেদের বাড়িকে আলাদা করতে সেগুলো নীল রঙ করতেন। সেই থেকেই এই রঙের ধারণা । ল্যাপিস থেকে কোবাল্ট—বিভিন্ন নীলের ছোঁয়া শহরটিকে এক অনন্য সৌন্দর্য দেয়।যদিও স্থানীয়রা বলেন, এই নীল রঙ গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে ঘর ঠান্ডা রাখে!

৩. রুপালি শহর – কটক (ওড়িশা)

চমৎকার রূপার ফিলিগ্রি শিল্পের জন্য কটক শহরকে বলা হয় ‘রুপালি শহর’।এই ফিলিগ্রি গয়না হল সোনা বা রুপোর সরু তার দিয়ে তৈরি, যা অত্যন্ত সূক্ষ্ম কারুকার্যের জন্য জগৎ বিখ্যাত। এই ফিলিগ্রি গয়না বিদেশেও রপ্তানি করা হয়ে থাকে।বহু বছর ধরে এই শিল্পের কেন্দ্র হিসেবে কটক বিখ্যাত। রুপো ছাড়াও এখানে হাতির দাঁতের ও পিতলের সূক্ষ্ম শিল্পকর্ম পাওয়া যায়—যা পর্যটকদের জন্য এক দুর্দান্ত সংগ্রহ।

৪. সাদা শহর – উদয়পুর (রাজস্থান)

রাজকীয় প্রাসাদ ও হ্রদের জন্য বিখ্যাত উদয়পুরকে বলা হয় ‘সাদা শহর’।এটি রাজস্থানের সবচেয়ে সুন্দর শহরও। মার্বেল পাথরের সাদা স্থাপত্য এবং প্রাসাদগুলোকে করে তুলেছে রাজস্থানের রত্ন। এটিকে হ্রদের শহর এবং প্রাচ্যের ভেনিসও বলা হয়। অনন্য এই শহর তার সৌন্দর্য এবং রাজকীয় জাঁকজমকের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। অনেকে বলেন এখানকার প্রতিটি মোড়ে ইতিহাস, শিল্প এবং সংস্কৃতির এক ঝলক মেলে।

৫. সোনালি শহর – জয়সলমের (রাজস্থান)

হলুদ বেলেপাথরের স্থাপত্য, সোনালি মরুভূমির বালি আর সূর্যের আভা — এই তিনের মিলনে গড়ে উঠেছে ভারতের ‘সোনালি শহর’ জয়সলমের।জয়সলমীরকে 'সোনালি শহর' বলা হয় কারণ এর দুর্গ এবং ভবনগুলো সোনালি-হলুদ বেলেপাথর দিয়ে তৈরি, যা সূর্যরশ্মিতে সোনালি আভা ছড়ায়। থর মরুভূমির কিনারায় অবস্থিত এই শহর ইউনেস্কোর একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। জয়সলমীরের সবকিছুই আক্ষরিক অর্থে এবং সাংস্কৃতিকভাবে সোনালী আভায় জ্বলজ্বল করে।

৬. কমলা শহর – নাগপুর (মহারাষ্ট্র)

নাগপুরের নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের বিখ্যাত ‘কমলা’ ফলের নাম। কমলালেবুর জন্যই নাগপুরকে বলা হয় ‘কমলা শহর’।মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলের প্রধান শহর নাগপুর, উচ্চমানের ম্যান্ডারিন কমলার বিখ্যাত এবং এজন্য এটি 'কমলা শহর' নামে পরিচিত।এখানকার কমলা 'নাগপুর কমলা' নামে পরিচিত।শুধু ফল নয়, এখানকার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলোও পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

৭. সবুজ শহর - চণ্ডীগড়

চণ্ডীগড় ভারতের প্রথম দিকের পরিকল্পিত শহরগুলির মধ্যে একটি, যা তার স্থাপত্য এবং শহুরে নকশার জন্য পরিচিত। আন্তর্জাতিক মানের এই পরিকল্পিত শহরে বাগান, পার্ক ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচুর সবুজের স্থান দেওয়া হয়েছে, তাই এর নাম সবুজ শহর।চণ্ডীগড় ভারতের দুটি ধনী রাজ্যের রাজধানী এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।

৮. ব্ল্যাক টাউন - কলকাতা

ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশরা তাদের বাসস্থান থেকে ভারতীয়দের আলাদা করে রাখত। তার নিজেদের জন্য ‘হোয়াইট টাউন’ নামে এলাকা তৈরি করেছিল, অন্যদিকে ভারতীয়দের বাসস্থানকে বলা ‘ব্ল্যাক টাউন’। সাহেবরা মনে করত যে ভারতীয়দের থাকার জায়গা নোংরা, অপরিস্কার, সর্বোপরি তাদের গায়ের রং কালো। সেই থেকেই কলকাতার নামের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে কালো শহর বা ‘ব্ল্যাক টাউন’ কথাটা জুড়ে গেছে।



ভারতের কিছু রঙিন শহর এক নজরে

জয়পুর - গোলাপি শহর

যোধপুর - নীল শহর

জয়সলমের - সোনালি শহর

উদয়পুর - সাদা শহর

নাগপুর - কমলা শহর

কটক - রূপালি শহর

চণ্ডীগড় - সবুজ শহর

কলকাতা - ব্ল্যাক টাউন

পিন্টারেস্টে ‘খোশখবরের’ আশ্চর্য দুনিয়া।ক্লিক করুন এই লিঙ্কে


[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]

[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।] 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code